রাতের দিকে হালকা চাদর থেকে মোটার দিকে যাওয়া শুরু হয়ে গেছে। আর কয়েক দিনে মোটা থেকে তো কম্বলের দিকে হাত বারাতে হবে।
এমন সময় শরীরের অন্দরের তাপমাত্র বাইরের টেম্পারেচারের থেকে নিচে নেমে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে তো, না হলে যে বেজায় বিপদ!
আসলে তাপমাত্র কমতে থাকলে আমাদের হজম ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দেহের অন্দরে তাপমাত্রাও কমতে থাকে। তাই তো নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওযার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষ কিছু খাবারই পারে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে। কারণ এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলি শরীরের তাপমাত্রাকে বাড়িয়ে দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে ছোট-বড় নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। এখন প্রশ্ন হল শরীরকে গরম রাখতে কী কী খাবারের সঙ্গে বন্ধুত্ব করাটা জরুরি?
১. তিলপাট্টি:
তিল এবং গুড় দিয়ে বানানো মচমচে মিষ্টি জাতীয় এই খাবারটি শীতকালে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এক্ষেত্রে গুড় একদিকে যেমন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে, তেমনি অন্যদিকে তিল দেহের আন্দরে তাপমাত্র যাতে না কমে, সেদিকে খেয়াল রাখে। প্রসঙ্গত, রক্তাল্পতার মতো রোগের চিকিৎসাতেও গুড় এবং তিল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. লাডডু:
গাছের রস, ময়দা, চিনি, ঘি, বাদাম এবং এলাচ দিয়ে বানানো লাডডু যদি সারা শীতকাল জুড়ে খেতে পারেন, তাহলে রোগ ভোগের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। কারণ গাছ থেকে সংগ্রহ করা রস শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বাড়িয়ে দেয়। আর বাকি উপাদানগুলি শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. কমলা লেবু:
ভিটামিন সি এবং এ রয়েছে এমন ধরনের ফল শীতকালে বেশি মাত্রায় খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ এই দুটি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার ইমিউনিটি বেড়ে গেলে কোনও ধরনের রোগই ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না।
৪. গাজর:
শীতকালে সর্দিকাশির-সংক্রমণের খপ্পর থেকে বাঁচতে চান? চাহলে তো বন্ধু নিয়নিত গাজর খেতেই হবে। কারণ কমলা লেবুর মতো এই সবজিটিও ভিটামিন সি-এ ঠাসা। ফলে রোজের ডায়েটে গাজরের অন্তর্ভুক্তি ঘটালে রোগ ভোগের আশঙ্কা তো কমেই। সেই সঙ্গে শরীরও ভিতরে থেকে চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
৫. তিসির বীজ:
পরিমাণ মতো তিসির বীজ নিয়ে হলকা ভেজে নিন। তারপর তাতে অল্প করে গুড়, বাদাম এবং পেঁপের বীজ দিয়ে এক সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই পদটি সারা শীতকাল জুড়ে যদি খেতে পারেন, তাহলে শরীর নিয়ে আর কোনও চিন্তাই থাকবে না। কারণ যে যে উপাদানগুলি এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলি প্রতিটিই শরীর বান্ধব। শুধু তাই নয়, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ঘাটতি মেটাতেও তিসির বীজ দিয়ে বানানো এই পদটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. চিক্কি:
গুড় এবং বাদাম দিয়ে বানানো সুস্বাদু এই পদটি যেমন মুখরোচক, তেমনি শরীরের পক্ষে উপকারিও বটে। কারণ গুড় একদিকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে। অন্যদিকে বাদাম শরীরকে গরম রাখে। ফলে সব দিক থেকে শরীর এত মাত্রায় সুরক্ষিত হয়ে যায় যে অসুস্থ হওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।
৭. সবজির সঙ্গে ডিম:
শুধু গরম গরম চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিলে চলবে নাকি, এই ঠান্ডায় শরীরকে বাঁচাতে আরও কিছু করতে হবে তো! ডিম খান তো? তাহলে প্রতিদিন একটা করে ডিমের অমলেট, পছন্দের যে কোনও সবজির সঙ্গে খেতে হবে। তাহলেই কেল্লাফতে! আসলে এই পদটি একদিকে যেমন প্রোটিনের ঘাটতি মিটিয়ে শরীরে শক্তি বাড়াবে, তেমনি অন্যদিকে পেট ভরে সবজি খাওয়ার কারণে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। ফলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এতটা শক্তিশালী হয়ে উঠবে যে শরীরকে নিয়ে আর কোনও চিন্তাই থাকবে না।
No comments:
Post a Comment