সভ্য যুগে বসবাস করেও যখন পত্রিকার পাতা উল্টে, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঘেঁটে কিংবা টিভি চ্যানেলে কোনো নারীর নির্যাতিত হওয়ার সংবাদ চোখে পড়ে, তখন দীর্ঘশ্বাস বের হওয়া ছাড়াও নিজের মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগে-এ কেমন সভ্যতা! আমরা তো শিক্ষিত হয়েছি ও হচ্ছি; কিন্তু তারপরও যদি আমাদের সমাজের মা, বোন, স্ত্রী তথা কোনো নারী নির্যাতিত হন, তখন আমাদের শিক্ষা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। কী শিখলাম আমরা! তাছাড়াও নারী নির্যাতন বিলোপ করার জন্য তো আজ থেকে মানুষ সক্রিয় নয়; সেই ১৯৯৯ সালে ১৭ নভেম্বর তারিখে গৃহীত এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ নভেম্বরকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক ‘নারী নির্যাতন বিলোপ’ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। অবশ্য নারী আন্দোলনকারীরা ১৯৮১ সাল থেকেই এ দিনটি ফলাওভাবে পালন করে আসছেন। এগুলো কেবল কাগজ-কলমের হিসাব। সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরও অনেক পদ্ধতিতেই অনেক আগে থেকেই নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আছেন নারী-পুরুষ উভয়েই। তবুও কেন যেন এই সামাজিক ব্যাধি একেবারে বিলুপ্ত হচ্ছে না। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র নারী নির্যাতন নিয়ে করা প্রথম সার্ভে ‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন (ভিএডব্লিউ) ২০১১’ শীর্ষক জরিপ অনুযায়ী, বিবাহিত নারীদের ৮৭ শতাংশই স্বামীর মাধ্যমে কোনো না কোনো সময়ে, কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৮২ শতাংশই মানসিক নির্যাতনের শিকার। কোন ধরনের নির্যাতন কোথায় হয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে অধিকাংশ নারীই স্বামীর ঘরে মানসিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করেছিলেন।
আফসোসের বিষয় হচ্ছে, আজকাল অনেক পদ্ধতিতেই একজন নারী নির্যাতিত হচ্ছেন কিন্তু অনেক সময় এমনও হয়- যিনি নির্যাতিত হচ্ছেন তিনি জানেনই যে তিনি নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন এবং নির্যাতনকারী নিজেও জানেন না যে তিনি যা করছেন, সেটি নারী নির্যাতনের মধ্যে পড়ে। ২০১০ সালের পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনে মানসিক নির্যাতনের সংজ্ঞা দেওয়া আছে। এতে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে পরিবারের অন্য কোনো নারী বা শিশু সদস্য শারীরিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন অথবা আর্থিক ক্ষতির শিকার হলে একে পারিবারিক সহিংসতা বোঝানো হয়েছে। এছাড়াও অবজ্ঞা, অপমান, মৌখিক নির্যাতন, ভয় দেখানো বা এমন কোনো উক্তি করা, যার মাধ্যমে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাকে মানসিক সহিংসতা অর্থে বোঝানো হয়েছে। স্বাভাবিক চলাচল, ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, হয়রানি, যোগাযোগ বা ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা মতামত প্রকাশে বাধা দেওয়াও নারী নির্যাতনের অন্তর্ভুক্ত।
এসব আইন, খসড়া, নীতিমালা ইত্যাদি সম্পর্কে অশিক্ষিত কিংবা স্বল্পশিক্ষিত জনসাধারণ হয়তো ওয়াকিবহাল নয়। কিন্তু শিক্ষিত সমাজও কি চোখ বন্ধ করে বাঁচেন? এ প্রশ্ন উঠে যখন সমাজের সভ্য শ্রেণির বাসিন্দারাও নারী নির্যাতনের মতো জঘন্য কাজ করে বসেন। সারা দেশে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া নারী নির্যাতনকে একটি সংবাদে উপস্থাপন করা হয়তো সম্ভব নয়, তবে আমাদের তারকা সমাজে এমন অনেক শিল্পীই রয়েছেন যারা কোনো না কোনো সময় নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নির্যাতিত তারকাদের সেই আর্তনাদ মিডিয়ার বদৌলতে গোপন থাকেনি। কখনো তারকা নিজেই প্রকাশ করেছেন তার নির্যাতিত হওয়ার কথা, কখনো বা মিডিয়ার সূচালো তদন্তে সেসব চলে এসেছে সংবাদে। আজ সে সকল নির্যাতিত বাংলাদেশি তারকাদের নির্যাতিত হওয়ার ফিরিস্তি সংকলন করার চেষ্টা করা হয়েছে এখানে।
মডেল ও অভিনেত্রী মাকসুদা আকতার প্রিয়তী। শৈশবেই তিনি হয়েছিলেন যৌন নিপীড়নের শিকার। এ কথা তিনি নিজেই জানিয়ে ছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। শৈশবে চার থেকে সাত বছর বয়সেই প্রিয়তী তার আত্মীয়-স্বজন, খেলার সাথী ও বন্ধুদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন পাঁচ-ছয় বার! আর তাই বড় হয়ে শিশুদের উপর যৌন নিপীড়ন রোধের জন্য কঠোর আইন করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অভিনেত্রী শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নির জীবনেও ঘটেছে স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের ঘটনা। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার স্বামীর প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন যে- তার স্বামী একজন প্রতারক ও অসুস্থ। তার স্বামী তাকে বোকা বানিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন। অতঃপর তিন্নির উপর চালানো হয়েছিল নির্যাতন।
গত বছরের ঘটনা। মিডিয়া সরগরম হয়ে উঠেছিল ‘বানিয়া বন্ধু’ খ্যাত কণ্ঠশিল্পী সালমা আক্তারের পারিবারিক কলহের সংবাদে। ক্লোজআপ ওয়ান ‘তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’-এর দ্বিতীয় আসরের বিজয়ী সালমা আক্তার ছিলেন সেই আসরের সবচেয়ে কণিষ্ঠ শিল্পী। ছোট একটি মেয়ে, সবার আদরের পাত্রী। অ্যালবাম, স্টেজ শো, চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করতে করতে পাকাপোক্ত জায়গা করে নিচ্ছিলেন সংগীতাঙ্গনে। চারদিকে তখন সালমার জয়জয়কার। স্টেজ শো করতে গিয়েছিলেন দিনাজপুরে। সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে একজন ব্যবসায়ীর। অতঃপর প্রেম পরিণয়। ২০১১ সালে পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু হায়! বিয়ের পরপরই সুকন্ঠী সালমার জীবন বাঁক নেয় এক অনাকাঙ্ক্ষিত দিকে। সে জীবন শিল্পের বিপরীত দিকে। আকস্মিকভাবেই ঘর-সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি, আর গান হয়ে যায় অনিয়মিত। এরই মধ্যে ২০১৪ সালে তাদের সংসারে জন্মায় একটি কন্যা সন্তান। কিন্তু স্ত্রী কন্যার মোহ- সংসারে আটকে রাখতে পারেনি সালমার স্বামীকে। স্বামী হয়েছিলেন পর নারীতে আসক্ত। প্রায়শই মদ্যপ দেখতে পেতেন স্বামীকে। এতে করে কণ্ঠশিল্পী সালমা মানসিকভাবে নির্যাতিত হতেন। শুরু হয়েছিল টানা পোড়েন। স্বামীর অনাচারের প্রতিবাদ করতে গেলে সালমাকে সহ্য করতে হতো অকথ্য নির্যাতন। এসব নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে একটা সময় আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন সালমা। পরিশেষে গত বছরের নভেম্বরের ২০ তারিখে তারা ডিভোর্সে করেন।
চলতি বছর সেপ্টেম্বরের ঘটনা। অভিনেত্রী বাঁধনও স্বামী কর্তৃক অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের পথ অবলম্বন করে নিয়েছেন। স্বামীর নির্যাতনের কথা মিডিয়ায় অনেক পড়ে জানাজানি হলেও তাদের বিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়েছিল ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর তারিখে।
চলতি বছর অক্টোবরের ঘটনা। পপ কণ্ঠশিল্পী মিলা ১০ বছর সম
আফসোসের বিষয় হচ্ছে, আজকাল অনেক পদ্ধতিতেই একজন নারী নির্যাতিত হচ্ছেন কিন্তু অনেক সময় এমনও হয়- যিনি নির্যাতিত হচ্ছেন তিনি জানেনই যে তিনি নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন এবং নির্যাতনকারী নিজেও জানেন না যে তিনি যা করছেন, সেটি নারী নির্যাতনের মধ্যে পড়ে। ২০১০ সালের পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনে মানসিক নির্যাতনের সংজ্ঞা দেওয়া আছে। এতে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে পরিবারের অন্য কোনো নারী বা শিশু সদস্য শারীরিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন অথবা আর্থিক ক্ষতির শিকার হলে একে পারিবারিক সহিংসতা বোঝানো হয়েছে। এছাড়াও অবজ্ঞা, অপমান, মৌখিক নির্যাতন, ভয় দেখানো বা এমন কোনো উক্তি করা, যার মাধ্যমে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাকে মানসিক সহিংসতা অর্থে বোঝানো হয়েছে। স্বাভাবিক চলাচল, ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, হয়রানি, যোগাযোগ বা ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা মতামত প্রকাশে বাধা দেওয়াও নারী নির্যাতনের অন্তর্ভুক্ত।
এসব আইন, খসড়া, নীতিমালা ইত্যাদি সম্পর্কে অশিক্ষিত কিংবা স্বল্পশিক্ষিত জনসাধারণ হয়তো ওয়াকিবহাল নয়। কিন্তু শিক্ষিত সমাজও কি চোখ বন্ধ করে বাঁচেন? এ প্রশ্ন উঠে যখন সমাজের সভ্য শ্রেণির বাসিন্দারাও নারী নির্যাতনের মতো জঘন্য কাজ করে বসেন। সারা দেশে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া নারী নির্যাতনকে একটি সংবাদে উপস্থাপন করা হয়তো সম্ভব নয়, তবে আমাদের তারকা সমাজে এমন অনেক শিল্পীই রয়েছেন যারা কোনো না কোনো সময় নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নির্যাতিত তারকাদের সেই আর্তনাদ মিডিয়ার বদৌলতে গোপন থাকেনি। কখনো তারকা নিজেই প্রকাশ করেছেন তার নির্যাতিত হওয়ার কথা, কখনো বা মিডিয়ার সূচালো তদন্তে সেসব চলে এসেছে সংবাদে। আজ সে সকল নির্যাতিত বাংলাদেশি তারকাদের নির্যাতিত হওয়ার ফিরিস্তি সংকলন করার চেষ্টা করা হয়েছে এখানে।
মডেল ও অভিনেত্রী মাকসুদা আকতার প্রিয়তী। শৈশবেই তিনি হয়েছিলেন যৌন নিপীড়নের শিকার। এ কথা তিনি নিজেই জানিয়ে ছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। শৈশবে চার থেকে সাত বছর বয়সেই প্রিয়তী তার আত্মীয়-স্বজন, খেলার সাথী ও বন্ধুদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন পাঁচ-ছয় বার! আর তাই বড় হয়ে শিশুদের উপর যৌন নিপীড়ন রোধের জন্য কঠোর আইন করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অভিনেত্রী শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নির জীবনেও ঘটেছে স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের ঘটনা। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার স্বামীর প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন যে- তার স্বামী একজন প্রতারক ও অসুস্থ। তার স্বামী তাকে বোকা বানিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন। অতঃপর তিন্নির উপর চালানো হয়েছিল নির্যাতন।
গত বছরের ঘটনা। মিডিয়া সরগরম হয়ে উঠেছিল ‘বানিয়া বন্ধু’ খ্যাত কণ্ঠশিল্পী সালমা আক্তারের পারিবারিক কলহের সংবাদে। ক্লোজআপ ওয়ান ‘তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’-এর দ্বিতীয় আসরের বিজয়ী সালমা আক্তার ছিলেন সেই আসরের সবচেয়ে কণিষ্ঠ শিল্পী। ছোট একটি মেয়ে, সবার আদরের পাত্রী। অ্যালবাম, স্টেজ শো, চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করতে করতে পাকাপোক্ত জায়গা করে নিচ্ছিলেন সংগীতাঙ্গনে। চারদিকে তখন সালমার জয়জয়কার। স্টেজ শো করতে গিয়েছিলেন দিনাজপুরে। সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে একজন ব্যবসায়ীর। অতঃপর প্রেম পরিণয়। ২০১১ সালে পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু হায়! বিয়ের পরপরই সুকন্ঠী সালমার জীবন বাঁক নেয় এক অনাকাঙ্ক্ষিত দিকে। সে জীবন শিল্পের বিপরীত দিকে। আকস্মিকভাবেই ঘর-সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি, আর গান হয়ে যায় অনিয়মিত। এরই মধ্যে ২০১৪ সালে তাদের সংসারে জন্মায় একটি কন্যা সন্তান। কিন্তু স্ত্রী কন্যার মোহ- সংসারে আটকে রাখতে পারেনি সালমার স্বামীকে। স্বামী হয়েছিলেন পর নারীতে আসক্ত। প্রায়শই মদ্যপ দেখতে পেতেন স্বামীকে। এতে করে কণ্ঠশিল্পী সালমা মানসিকভাবে নির্যাতিত হতেন। শুরু হয়েছিল টানা পোড়েন। স্বামীর অনাচারের প্রতিবাদ করতে গেলে সালমাকে সহ্য করতে হতো অকথ্য নির্যাতন। এসব নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে একটা সময় আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন সালমা। পরিশেষে গত বছরের নভেম্বরের ২০ তারিখে তারা ডিভোর্সে করেন।
চলতি বছর সেপ্টেম্বরের ঘটনা। অভিনেত্রী বাঁধনও স্বামী কর্তৃক অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের পথ অবলম্বন করে নিয়েছেন। স্বামীর নির্যাতনের কথা মিডিয়ায় অনেক পড়ে জানাজানি হলেও তাদের বিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়েছিল ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর তারিখে।
চলতি বছর অক্টোবরের ঘটনা। পপ কণ্ঠশিল্পী মিলা ১০ বছর সম
No comments:
Post a Comment